মোঃ রেজাউল করিম, ঈদগাঁও, কক্সবাজার:::
পবিত্র রমজান মাসে ইফতার ও সেহেরীর সময় কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওতে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেড়েই চলছে। যাতে করে জনজীবনের পাশাপাশি রোজাদাররা অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। আবার নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবীও উঠেছে। জানা যায়, সদর উপজেলার গুরুত্ববহ এলাকা বৃহত্তর ঈদগাঁওতে রমজানের ইফতার, তারাবি নামাজ আর সেহরীর সময় দেখা দিয়েছে চরম লোডশেডিং। বর্তমান রমজান মাসটি ব্যবসায়ী মৌসুম হিসাবে পরিচিত হলেও লোডশেডিং নিয়ে মহা বিপাকে পড়েছে তারা। পাশাপাশি রোজাদাররা তারাবি, সেহরী ও ইফতারের সময় বিদ্যুতের লোডশেডিং থেকে কিভাবে মুক্তি পায় সে বিষয়েও উপায় খুঁজে পাচ্ছে না কোনমতে। ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকা ঈদগাঁও বাজারে দৈনিক লাখ লাখ টাকার ব্যবসা বাণিজ্য হলেও এখানকার ব্যবসায়ীরা বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে টেনশনে ভুগছেন দিনের পর দিন। এই লোডশেডিং সমস্যা থেকে কবে মুক্তি পাবে ব্যবসায়ী সহ নানা শ্রেণীর লোকজন। এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে গ্রাহকদের মাঝে। এছাড়া লোডশেডিং শুরু হওয়ায় বিপাকে পড়েছে ব্যবসায়ীরাসহ শিক্ষার্থীরা। বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে কম্পিউটার, ফটোকপি, প্রিন্ট, নানা ব্যবসা বানিজ্য, স-মিল সহ নানা কলকারখানা চালাতে ভোগান্তি চরমে পৌছেছে স্ব স্ব ব্যবসায়ীদের মাঝে। এদিকে বৃহত্তর এলাকার বিভিন্ন বাসাবাড়ীতে লোডশেডিংয়ের কারনে ফ্রিজে রক্ষিত নানা খাদ্যদ্রব্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে নানা হাসপাতালে ফ্রিজে রাখা দামী দামী ঔষধপত্রাদি নষ্টের পথে বলে একাধিক সূত্রে প্রকাশ। আবার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা চার দেয়ালের মাঝে গরমে হাবুডুবু খাচ্ছে। এলাকার সচেতন মহলের প্রশ্ন, সদর উপজেলার বৃহত্তর ঈদগাঁও তথা ছয় ইউনিয়নে বিদ্যুৎ লোডশেডিং নিয়ে বিপাকে গ্রামাঞ্চলের লোকজন। তারপর ও মরার উপর খাঁড়ার ঘা হিসাবে বিদ্যুৎ বিল নানা কারণে বেড়েছে বলেও একাধিক লোকজনের অভিযোগ। আবার, লক্ষ লক্ষ টাকার পুজি দিয়ে ঈদগাঁও’র ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে হিমশিম খাচ্ছে দারুনভাবে লোডশেডিং নিয়ে। অনতিবিলম্বে লোডশেডিং বন্ধ করার আহবান বিশাল এলাকাবাসীর। অনতিবিলম্বে পবিত্র রমজান মাসে ঈদগাঁও জুড়ে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জোর দাবী জানিয়েছে ব্যবসায়ী, রোজাদার ও মুসল্লী সমাজ।
————————————————–
ঈদগাঁওর ঈদ বাজারে কাপড়ের চড়াদাম
মোঃ রেজাউল করিম, ঈদগাঁও, কক্সবাজার :::
মাঝ রমজানের পরপরই কক্সবাজার সদর উপজেলার বহুল আলোচিত ব্যস্ততম বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে সুপরিচিত ঈদগাঁও বাজারের বিভিন্ন মার্কেটে ঈদ বাজার জমে উঠছে ধীরে ধীরে। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সী ক্রেতারা মার্কেটমুখী হচ্ছে। এমনকি নারী-পুরুষের উপচেপড়া ভীড় লক্ষ্যণীয়। তবে ক্রেতারা চড়াদাম নিয়ে ফের বিপাকে পড়েছে। এদিকে নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লাখ লাখ টাকার পুঁজি খাটিয়ে ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়ছিল রমজানের শুরু থেকে। কিন্তু পনের রমজান পার হতে না হতেই ব্যবসা মোটামুটিভাবে জমে উঠায় ব্যবসায়ীদের মাঝে আশার আলো দেখা দিয়েছে। তবে একাধিক ক্রেতার অভিযোগ যে, নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে ছোট-বড়দের কাপড় চোপড়ে ব্যাপকভাবে দাম হাকাচ্ছে। অথচ বিগত বছরের তুলনায় এবছর একটু ঈদ কাপড়ের দাম বৃদ্ধি বলে জানান অনেকে। আবার অনেকে দামের কারণে দোকান ঘুরে ঘুরে পছন্দের কাপড় দেখছেন। জানা যায়, ক্রেতারা একটু দেরিতে হলেও মার্কেটমুখী হচ্ছে। ২১ জুন বহুল আলোচিত ঈদগাঁও বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঈদগাঁওর নিউ মার্কেট, রহমানিয়া মার্কেট, শফি সুপার মার্কেট, নুর শপিং কমপ্লেক্স, বেদার মার্কেট, মাতবর মার্কেট, কবিরাজ সিটি সেন্টার, তাজ শপিং কমপ্লেক্স, ফরাজী মার্কেট, ছকিনা মার্কেট, বঙ্গ মার্কেট, হাজী মার্কেট ও বাজারের আলোচিত পশ্চিমের কাপড়ের গলিতে উল্লেখযোগ্য ক্রেতার সমাগম ঘটেছে। বলতে গেলে ভরা মৌসুমেও ক্রেতাহীন মার্কেট ভরপুর হতে যাচ্ছে। তবে কয়েক ব্যবসায়ীর মতে, ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে লাখ লাখ টাকার মালামাল এনে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভরপুর করে রেখেছে। টার্গেট আসন্ন ঈদ মৌসুমে বিকিকিনির লক্ষ্যে। সে পরিমাণ ক্রেতা বাজারমুখী না হওয়ায় তারা অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েছিল। রমজানের মাঝপথে জমে উঠেছে ধীরে ধীরে ঈদের কেনাকাটা। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিকিকিনি হলেও বড় অংকের বিকিকিনির এখনো দেখা মেলেনি। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা স্ব স্ব মার্কেটে তাদের নিজ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান হরেক রকমের ডেকোরেশন পূর্বক আলোক সজ্জার মাধ্যমে ক্রেতাদের দৃষ্টিনন্দন করার জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি নিত্য নতুন ডিজাইনের সব বয়সী লোকজনের কাপড় চোপড়ে ইতিমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে ক্রয় করা হয়েছে। আসন্ন ঈদ উপলক্ষ্যে ব্যবসায়ীদের ভরা মৌসুম হিসেবে ব্যবসায়ীরা সব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। এখন শুধু অপেক্ষার পালা ক্রেতাদের। তার পাশাপাশি নানা মার্কেটের ন্যায় বিভিন্ন কোম্পানীর উন্নতমানের ব্র্যান্ডের কাপড়ের শো-রুম ও ঈদগাঁও বাজারে উদ্ভোধন করা হয়েছে। যেন বৃহত্তর ঈদগাঁও তথা ছয় ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে আসা ক্রেতাদের ভালমানের কাপড় উপহার দিতে পারে সে আশায়। এ ব্যাপারে কয়েক ব্যবসায়ীর মতে, বহু টাকার নিত্য নতুন ডিজাইনের মালামাল এনে ঈদ মৌসুমে দোকান ভরপুর করেছি। সে পরিমাণ ক্রেতা দেখা যাচ্ছে না। অপরদিকে নানা মার্কেটের পাশাপাশি হকার কিংবা ফুটপাতে বসা ব্যবসায়ীরাও তাদের ব্যবসা পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছে। এককথায় আসন্ন ঈদ মৌসুম উপলক্ষ্যে তাদের এ ফুটপাত ব্যবসা জমে উঠছে। কেননা, অল্পদামে ভাল ও উন্নতমানের কাপড় ক্রয় করতে পারে ক্রেতারা। প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জের হতদরিদ্র লোকজন ঈদ মৌসুমে তাদের সন্তানদেরকে ঈদের কেনাকাটা স্বরূপ কাপড় কিনতে ফুটপাত ব্যবসায় চলে আসে। তবে দূর-দূরান্তের ক্রেতাদের মতে, পকেটমার, নকল টাকা, ঝাপটাবাজ, ছিনতাইকারী প্রতিরোধে ঈদগাঁওর ঈদ বাজারে নিরবিচ্ছিন্ন পুলিশী টহলের জোর দাবী জানান। পাশাপাশি ঈদ বাজার ক্রয় করে ক্রেতারা যেন সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে বাড়ী ফিরতে পারে সে ব্যবস্থা করারও আহবান জানান প্রশাসনের নিকট।
পাঠকের মতামত: